ই- পাসপোর্ট কী, ফি কত ও সুবিধা ।

Share:


ই- পাসপোর্ট কী, ফি কত ও সুবিধা । 

ই-পাসপোর্ট কে এক প্রকার ডিজিটাল পাসপোর্ট বলা চলে কারণ এতে এত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চিপ থাকে যেগুলোত পাসপোর্ট বহনকারীর সকল প্রকার তথ্য থাকে। 

বাংলাদেশ প্রধানত দুই ধরনের ই-পাসপোর্ট বিদ্যমান বাংলাদেশের প্রধানত 5 বছর মেয়াদী এবং 10 বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করার চার্জ করা যায়

আপনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ই-পাসপোর্ট আপনার জন্ম নিবন্ধন অথবা এনআইডি কার্ড দিয়ে করতে পারবেন খুব সহজে।

ই-পাসপোর্ট কিঃ

ই-পাসপোর্ট বা ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট হলো একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট যাতে একটি ইলেকট্রনিক চিপ রয়েছে।

 ইলেকট্রনিক চিপের মধ্যে রয়েছে বায়মেট্রিক তথ্য যা পাসপোর্টধারীর পরিচয় প্রমাণের জন্যে ব্যবহার করা হয়। 

বর্তমানে ই-পাসপোর্টে ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও চোখের মনির বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। ই-পাসপোর্টে মোট ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে।


-পাসপোর্ট দেখতে কেমন 

ই-পাসপোর্ট দেখতে একটি ছোট বইয়ের মতো একটি ছোট বইয়ের মতো তবে এতে পলিমারের তৈরি একটি চিপ সংযুক্ত থাকে যেখানে পাসপোর্টধারীর সকল প্রকার তথ্য সংরক্ষিত থাকে।


ই-পাসপোর্ট বর্তমানের বই আকারে পাসপোর্ট যেমন আছে তেমনই। শুধু পাসপোর্টের পাতার শুরুতে ব্যক্তির তথ্য নিয়ে যে দুই পাতা আছে তা থাকবেনা। ব্যক্তির তথ্য পাসপোর্টেই পলিমারের তৈরি একটি চিপের মধ্যে সংরক্ষিত থাকবে।

ই-পাসপোর্ট সুবিধা, করার নিয়মঃ 

আর প্রযুক্তিগত ভাবে MRP পাসপোর্টের সাথে ই-পাসপোর্টের প্রার্থক্য আছে। এতে আছে শনাক্তকরণ চিহ্ন, স্মার্টকার্ড প্রযুক্তির মতো মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা। ই-পাসপোর্টের প্রতিটি পাতায় খুব সূক্ষ্ম ডিজাইনের জটিল সব জলছাপ থাকে। এই পাসপোর্টের মেয়াদ হয় বয়স ভেদে ৫ ও ১০ বছর। বর্তমানে ই-পাসপোর্ট করতে কাগজপত্র সত্যায়ন করা লাগে না। 

যদি কোন আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের কম হয় তবে সেক্ষেত্রে পাসপোর্ট পেতে জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি) জমা দিতে হবে এবং ১৮ বছর বয়সের নিচে সকল আবেদনকারীকে শুধুমাত্র ৫ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।

কিভাবে কাজ করবে ই-পাসপোর্টঃh

ই-পাসপোর্টের সব তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে ‘পাবলিক কি ডাইরেকটরি’তে (PKD)। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও) এই তথ্যভান্ডার পরিচালনা করে। ই-পাসপোর্ট স্ক্যান করলে ব্যক্তি পরিচয়সহ অন্যান্য তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই হয়ে যায়। এই জন্যে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার মুখোমুখি হতে হবে না। যাঁদের হাতে ই-পাসপোর্ট থাকবে, দেশের প্রতিটি বিমান ও স্থলবন্দরের স্বয়ংক্রিয় ই-গেট দিয়ে সীমান্ত পার হতে পারবে। তবে যাঁদের হাতে এমআরপি পাসপোর্ট থাকবে, তাঁদের ইমিগ্রেশনের কাজ বিদ্যমান পদ্ধতিতে চলমান থাকবে। ই-পাসপোর্টের বাহক কোনো দেশের দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আবেদনকারীর তথ্যের সঙ্গে PKD তে সংরক্ষিত তথ্য যাচাই করে নেবে। ইন্টারপোলসহ বিশ্বের সব বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ PKD তথ্যভান্ডারে ঢুকে তথ্য যাচাই করতে পারে।

ই-পাসপোর্টের সুবিধাঃ

ই-পাসপোর্টের তথ্য চুরি বা নকল করা এবং তা কাজে লাগানো প্রায় অসম্ভব। ই-পাসপোর্ট দিয়ে ইমিগ্রেশন পার হওয়া অপেক্ষাকৃত অনেক সহজ। সব তথ্য, স্বাক্ষর, ছবি, চোখের কর্নিয়া ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট সুরক্ষিত থাকার কারণে তা জাল করা সম্ভব হয় না।

বর্ডার পার হওয়ার সময় যাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত হচ্ছে দ্রুত ও নির্ভুলভাবে। এয়ারপোর্ট বা বর্ডার পার হওয়ার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পরিচয় নির্ণয় হচ্ছে।

ইন্টারপোলসহ বিশ্বের সব বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সহজেই তথ্য যাচাই করতে পারবে।

দূতাবাসে ভিসার আবেদন করলে দূতাবাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

ই-পাসপোর্ট করার উপায়ঃ  

প্রচলিত MRP পাসপোর্ট করার যে উপায় সেইভাবেই এই নতুন পাসপোর্ট করা হবে। ঢাকা ও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে আগের মতই পাসপোর্ট করা যাবে। ই-পাসপোর্টের জন্যে অন্যান্য তথ্যের সাথে বায়োমেট্রিক অতিরিক্ত তথ্য গুলো নেওয়া হবে। 

ই-পাসপোর্ট ফিঃ

পাসপোর্টে পৃষ্ঠা সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ৪৮ ও ৬৪ পৃষ্ঠা এই দুই ধরণের ই-পাসপোর্ট থাকছে। উভয় ধরণের পাসপোর্টে ডেলিভারি সময় অনুযায়ী আরও তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে। আর সে অনুয়ায়ী পাসপোর্টের ফি নির্ধারণেও রয়েছে ভিন্নতা। 


অনলাইনে আবেদন করা যাবেঃ 

 ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন পাসপোর্ট এর আবেদন করার জন্য আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন আপনি চাইলে অনলাইনে পাসপোর্ট এর আবেদন করতে পারবে। তবে ছবি, আঙ্গুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশের ছবির জন্যে নিজে স্বশরীরে হাজির হয়েই আপনার আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।

ই-গেট না থাকলে কিভাবে ইমিগ্রেশন হবেঃ 

বিমানবন্দর বা ইমিগ্রেশন পোর্ট সব জায়গাতেই ই-গেট থাকবে এবং পাশাপাশি প্রচলিত ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাও থাকবে। তাই ই-গেট না থাকলেও প্রচলিত ইমিগ্রেশন পদ্ধতিতে সবাই যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়া ই-পাসপোর্টে এমআরপি পাসপোর্টের মতো প্রথমে তথ্য সংবলিত দুইটি পাতা না থাকলেও সেখানে পাসপোর্ট বাহকের নাম, নম্বর, জন্মতারিখ ইত্যাদি তথ্য থাকবে। তাই ই-পাসপোর্ট দিয়েও প্রচলিত পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন পার হওয়া যাবে।

#এক_নজরে_ই-পাসপোর্ট 

কার্যকর/যাত্রা শুরুঃ  ২২ জানুয়ারি ২০২০

পাসপোর্টের ধরণঃ-    ২ প্রকার 

                                  ১. সাধারণ  ২. জরুরী 

#মেয়াদঃ 

১. ৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট হবে পাঁচ বছরের

২. ৬৪ পাতার ই-পাসপোর্ট হবে ১০ বছরের

#অবস্থানঃ বিশ্বে ১১৯ তম

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম ই-পাসপোর্ট চালু হচ্ছে। 

হাতে পেতে সময় লাগবে সর্বনিম্নঃ 

১. সাধারণ- ২১  দিন

২. জরূরী- ০৭ দিন

ই-পাসপোর্টের আবেদনঃ

অনলাইন আবেদন সাবমিট করতে হবে নতুন পাসপোর্টের জন্য।  প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে সাবমিট করার পর প্রিন্ট কপি নিতে হবে। সেই কপি স্ব-শরীরে গিয়ে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। আবেদন ফরমে ছবি ও সত্যায়ন করা না লাগলেও পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে।


আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় ই-পাসপোর্টের জন্য ডেমোগ্রাফিক তথ্য, ১০ আঙুলের ছাপ, চোখের কর্নিয়ার ছবি ও ডিজিটাল সই সংগ্রহ করবে পাসপোর্ট অফিস। এসব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ডাটা সেন্টার ও ডিজ্যাস্টার রিকভারি সেন্টারের সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি পাসপোর্টের আবেদনকারীদের পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য পার্সোনালাইজেশন সেন্টারে পাসপোর্ট প্রিন্টিংয়ের পর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও দূতাবাসগুলোয় পাসপোর্ট বিতরণ করা হবে। সব তথ্য চিপে যুক্ত থাকবে। ইমিগ্রেশন পুলিশ বিশেষ যন্ত্রের সামনে পাসপোর্টের পাতাটি ধরতেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।

পাসপোর্ট অফিসে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:


১। আবেদনপত্রের সারংশের প্রিন্ট কপি (অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহ)
২। সনাক্তকরণ নথির প্রিন্ট কপি (জাতীয় পরিচয় পত্র/ জন্ম নিবন্ধন নং)
৩। পেমেন্ট স্লিপ 
৪। পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং ডাটা পেজের প্রিন্ট কপি (যদি থাকে) 
৫। সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে  GO/NOC (যদি থাকে) 
৬। তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র(যদি থাকে)
৭। আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি(ঐচ্ছিক ) 

কত টাকা ও কত দিনে হাতে পাবো ই-পাসপোর্ট?

নিম্নোক্ত হারে পাসপোর্ট ফি প্রযোজ্য হবে (ভ্যাটসহ) :

৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট বইঃ

সাধারণ (২১ কর্মদিবস), ৪০২৫/- টাকা

জরুরী (১০ কর্মদিবস) ৬৩২৫/- টাকা

অতি-জরুরী (২ কর্মদিবস) ৮৬২৫/- টাকা

১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট বইঃ

সাধারণ (২১ কর্মদিবস), ৫,৭৫০/- টাকা

জরুরী (১০ কর্মদিবস) ৮,০৫০/- টাকা

অতি-জরুরী (২ কর্মদিবস) ১০,৩৫০/- টাকা

৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট বইঃ

সাধারণ (২১ কর্মদিবস), ৬৩২৫/- টাকা

জরুরী (১০ কর্মদিবস) ৮৬২৫/- টাকা

অতি-জরুরী (২ কর্মদিবস) ১২০৭৫/- টাকা

১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট বইঃ

সাধারণ (২১ কর্মদিবস), ৮,০৫০/- টাকা

জরুরী (১০ কর্মদিবস) ১০,৩৫০/- টাকা

অতি-জরুরী (২ কর্মদিবস) ১৩,৮০০/- টাকা

তবে পুরনো অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রি-ইস্যু করার ক্ষেত্রে অতি জরুরি পাসপোর্ট দু’দিনে, জরুরি পাসপোর্ট তিন দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট সাত দিনের মধ্যে পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য যে, ছবিতে বর্ণিত টাকার পরিমান ভ্যাট ছাড়া এবং উপরে বর্ণিত টাকার পরিমান ভ্যাটসহ।

যারা যারা ই-পাসপোর্টের জন্য ওয়েট করছিলেন তারা নিচের লিংকে একাউন্ট খুলে ফরম ফিলাপ করে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখুন। ফরম ফিলাপ করা যাচ্ছে দেখলাম। 

[https://www.epassport.gov.bd/](https://www.epassport.gov.bd/)

গতকাল চালু হয়েছে ই-পাসপোর্টের ওয়েবসাইট। যারা অপেক্ষা করছিলেন তারা ভিজিট করতে পারেন। বর্তমানে অ্যাপ্লিকেশনগুলি কেবল অনলাইনে জমা দেওয়া যাবে এবং আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময়সূচী তৈরি করতে হবে।

ফরম ও এপয়েন্টমেন্টঃ https://www.epassport.gov.bd/onboarding

ফি সংক্রান্ত বিস্তারিতঃ https://www.epassport.gov.bd/instructions/passport-fees

Collected

No comments

Featured post

কিভাবে NID কার্ড বের করা যায়?

NID কার্ড বের করবেন কিভাবে! NID (National identity card)  বের করার জন্য আপনার মোবাইলে / ডেস্কটপে অবশ্যই Chrome বা Mozila firefox যেকোনো একট...